কেন উপনিষদ – তৃতীয় খণ্ড

কেন উপনিষদ – তৃতীয় খণ্ড

1) ব্রহ্ম হ দেবেভ্যো বিজিগ্যে তস্য হ
ব্রহ্মণো বিজয়ে দেবা অমহীয়ন্ত।
ত ঐক্ষন্তাস্মাকমেবায়ম বিজয়োऽস্মাকমেবায়ম মহিমেতি ॥

অর্থ:- দেবতাদের পক্ষে স্বয়ং ব্রহ্মই এই যুদ্ধ জয় করেছিলেন। এই জয় ব্রহ্মেরই, কিন্তু এই জয় নিজেদের মনে করে দেবতারা অহঙ্কারী হয়ে উঠেছিলেন। তাঁরা ভাবলেন, ‘এ জয় আমাদেরই—এর সব কৃতিত্ব আমাদের প্রাপ্য।’

2) তদ্ধৈষাং বিজজ্ঞৌ তেভ্যো হ প্রাদুর্বভূব
তন্ন ব্যজানত কিমিদং য়ক্ষমিতি ॥

অর্থ:- ব্রহ্ম অবশ্যই দেবতাদের মিথ্যা অভিমানের কথা জেনে তাঁদেরই কল্যাণার্থে তাঁদের সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন। কিন্তু সেই দিব্যমূর্তিকে দেবতারা চিনতে পারলেন না।

3) তেऽগ্নিমব্রুবন্ জাতবেদ এতদ্বিজানীহি
কিমেতদ্ যক্ষমিতি তথেতি ॥

অর্থ:- তাঁরা অগ্নিকে বললেন, ‘হে সর্বজ্ঞ জাতবেদ, এই দিব্য সত্তার পরিচয় জেনে আসুন।’ (উত্তরে অগ্নি বললেন ‘তাই হবে।’

4) তদভ্যদ্রবত্তমভ্যবদৎ কোऽসীত্যগ্নির্বা
অহমস্মীত্যব্রবীজ্জাতবেদা বা অহমস্মীতি ॥

অর্থ:- অগ্নি দিব্যমূর্তির কাছে গেলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনি কে?’ উত্তরে অগ্নি বললেন, ‘আমি অগ্নি, আমি সামান্য নই। আমিই জাতবেদ (অর্থাৎ, সব প্রাণীকেই আমি জানি)।’

5) তস্মিংস্ত্বয়ি কিং বীর্যমিতি অপীদং
সর্বং দহেয়ম য়দিদং পৃথিব্যামিতি ॥

অর্থ:- দিব্যসত্তা প্রশ্ন করলেন, ‘আপনি তো দেখছি অসাধারণ। কিন্তু আপনার মধ্যে কোন্ বিশেষ শক্তি আছে?’ (অগ্নি বললেন ‘এই পৃথিবীর সবকিছু আমি পুড়িয়ে ছাই করে দিতে পারি।’

6) তস্মৈ তৃণং নিদধাবেতদ্দহেতি তদুপপ্রেয়ায়
সর্বজবেন তন্ন শশাক দগ্ধুং স তত এব
নিববৃতে নৈতদশকং বিজ্ঞাতুং যদেতদ্ য়ক্ষমিতি ॥

অর্থ:-(দিব্যমূর্তিটি) অগ্নির সামনে একটি তৃণখণ্ড রেখে বললেন, ‘এটিকে পোড়ান তো।’ (অগ্নি) সর্বশক্তি প্রয়োগ করেও সেটি পোড়াতে পারলেন না। দিব্যমূর্তির কাছ থেকে ফিরে গিয়ে তিনি (দেবতাদের বললেন: ‘ওই দিব্যমূর্তির পরিচয় জানতে আমি ব্যর্থ হয়েছি।’

7) অথ বায়ুমব্রুবন্ বায়বেতদ্বিজানীহি কিমেতদ্ য়ক্ষমিতি তথেতি ॥

অর্থ:- তখন দেবতারা বায়ুকে বললেন, ‘হে বায়ু, এই দিব্যমূর্তির পরিচয় ভালভাবে জেনে আসুন।’ (বায়ু বললেন:) ‘তাই হবে।’

8) তদভ্যদ্রবত্তমভ্যবদৎ কোऽসীতি বায়ুর্বা
অহমস্মীত্যব্রবীন্মাতরিশ্বা বা অহমস্মীতি ॥

অর্থ:- বায়ু সেই দিব্যমূর্তির কাছে গেলে মূর্তি প্রশ্ন করলেন, ‘আপনি কে?’ বায়ু বললেন, ‘আমি বায়ু, আমি সামান্য নই; আমিই মাতরিশ্বা (যিনি শূন্যে বিচরণ করেন)।’

9) তস্মিংস্ত্বয়ি কিং বীর্যমিতি অপীদং
সর্বমাদদীয় য়দিদং পৃথিব্যামিতি ॥

অর্থ:- (দিব্যমূর্তি প্রশ্ন করলেন:) ‘আপনি সত্যিই অসামান্য। কিন্তু আপনি কোন্ শক্তির অধিকারী?’ বায়ু বললেন, এই বিশ্বে যা কিছু আছে, সব আমি উড়িয়ে দিতে পারি।

10) তস্মৈ তৃণং নিদধাবেতদাদৎস্বেতি তদুপপ্রেয়ায়
সর্বজবেন তন্ন শশাকাদাতুং স তত এব নিববৃতে
নৈতদশকং বিজ্ঞাতুং যদেতদ্ য়ক্ষমিতি ॥

অর্থ:- (দিব্যমূর্তি) বায়ুর সামনে একটি তৃণখণ্ড রেখে বললেন, ‘এটিকে উড়িয়ে নিয়ে যান তো।’ (বায়ু) সবেগে ধেয়ে গেলেন এবং তাঁর সর্বশক্তি প্রয়োগ করলেন, কিন্তু তবুও তৃণটিকে নড়াতে পারলেন না। তাই ফিরে এসে তিনি (দেবতাদের বললেন ‘এই দিব্যমূর্তি যে কে তা আমি বুঝতে পারলাম না।’

11) অথেন্দ্রমব্রুবন্ মঘবন্নেতদ্বিজানীহি কিমেতদ্ য়ক্ষমিতি
তথেতি তদভ্যদ্রবৎ তস্মাৎ তিরোদধে ॥

অর্থ:- তখন দেবতারা ইন্দ্রকে বললেন, ‘হে মঘবা, এই দিব্যমূর্তির সঠিক পরিচয় জেনে আসুন।’ (ইন্দ্র বললেন:) ‘তাই হবে।’ কিন্তু ইন্দ্র কাছে যেতেই সেই দিব্যমূর্তি অদৃশ্য হলেন।

12) স তস্মিন্নেবাকাশে স্ত্রিয়মাজগাম বহুশোভমানামুমাং হৈমবতী তাং হোবাচ কিমেতদ্ য়ক্ষমিতি ॥

অর্থ:-ঐ আকাশে (যেখানে দিব্যমূর্তিকে দেখা গিয়েছিল) সালঙ্কারা এক নারীমূর্তি দেখা গেল। তিনি উমা হৈমবতী। ইন্দ্র তাঁর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ওই দিব্যমূর্তির স্বরূপ কি?’

Scroll to Top