কেন উপনিষদ – দ্বিতীয় খণ্ড

কেন উপনিষদ – দ্বিতীয় খণ্ড

1) য়দি মন্যসে সুবেদেতি দভ্রমেবাপি
নূনং ত্বং বেত্থ ব্রহ্মণো রূপম্‌।
য়দস্য ত্বং য়দস্য দেবেষ্বথ নু
মীমাংস্যমেব তে মন্যে বিদিতম্‌ ॥

অর্থ:- যদি কেউ মনে করেন যে, আমি ব্রহ্মকে ভালমতো জেনে ফেলেছি, তবে একথা নিশ্চিত যে, তিনি ব্রহ্মের স্বরূপ সম্বন্ধে প্রায় কিছুই জানেন না। তিনি জীবাত্মা, দেবতাদের ও দৃশ্যমান জগতে ব্রহ্মের প্রকাশকেই কেবল জেনেছেন। সুতরাং ব্রহ্ম সম্বন্ধে আরও গভীর অনুসন্ধান প্রয়োজন। (শিষ্য): আমার মনে হয়, আমি (ব্রহ্মকে) জানি।

2) নাহং মন্যে সুবেদেতি নো ন বেদেতি বেদ চ।
য়ো নস্তদ্বেদ তদ্বেদ নো ন বেদেতি বেদ চ ॥

অর্থ:- (ব্রহ্মকে) সম্যক্ জেনেছি এমন কথা আমি মনে করি না। জানি না তাও নয়, আবার জানি—তাও বলতে পারি না। শিষ্যদের মধ্যে উপরি-উক্ত বাক্যের অর্থ যিনি জানেন, তিনিই (ব্রহ্মকে) সঠিক জানেন।

3) য়স্যামতং তস্য মতং মতং য়স্য ন বেদ সঃ।
অবিজ্ঞাতং বিজানতাং বিজ্ঞাতমবিজানতাম্‌ ॥

অর্থ:- যিনি বলেন যে, তিনি (ব্রহ্মকে) জানেন না, তিনিই ব্রহ্মকে জানেন; যিনি বলেন যে, তিনি ব্রহ্মকে জানেন, তিনি ব্রহ্মকে জানেন না। যাঁরা বলেন যে, তাঁরা জানেন না, এ তত্ত্ব তাঁদেরই জানা; যাঁরা বলেন যে, তাঁরা জানেন, এ তত্ত্ব তাঁদের অজানা।

4) প্রতিবোধবিদিতং মতমমৃতত্বং হি বিন্দতে।
আত্মনা বিন্দতে বীর্যম বিদ্যয়া বিন্দতেऽমৃতম্‌ ॥

অর্থ:- যখন কেউ ব্রহ্মকে চেতনার সর্বস্তরে, অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে উপলব্ধি করেন তখন তিনি প্রকৃত জ্ঞান লাভ করেন এবং জন্মমৃত্যুর পারে চলে যান। আত্মজ্ঞানের দ্বারা মানুষ শক্তি অর্জন করে; প্রকৃত জ্ঞান লাভ করলে মানুষ অমর হয়ে যায়।

5) ইহ চেদবেদীদথ সত্যমস্তি।
ন চেদিহাবেদীন্মহতী বিনষ্টিঃ।
ভূতেষু ভূতেষু বিচিত্য ধীরাঃ।
প্রেত্যাস্মাল্লোকাদমৃতা ভবন্তি ॥

অর্থ:-কেউ যদি এ জীবনেই আত্মাকে ব্রহ্মরূপে জানতে পারেন, তবে তিনি সর্বোচ্চ জ্ঞানের অধিকারী হন। এই জ্ঞান ছাড়া অশেষ দুঃখভোগ অনিবার্য। কিন্তু প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি, যিনি এই সত্য জানেন যে, ব্রহ্ম সকল বস্তু ও সকল জীবের মধ্যে অনুস্যূত হয়ে আছেন, তিনি নিজেকে এই জগৎ থেকে প্রত্যাহার করে নেন এবং মুক্ত হয়ে যান।

Scroll to Top